রাজধানীর বনশ্রীতে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের দায়ে গৃহশিক্ষক জাহিদুল ইসলামকে (৩০) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এর পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থ অনাদায়ে তাকে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোসাম্মৎ রোকশানা বেগম হ্যাপী এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত জাহিদুল ইসলাম কারাগার থেকে আদালতে হাজির ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা জারি করে তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।
দণ্ডিত জাহিদুল ইসলাম বরগুনা সদরের পরীখাল গ্রামের মো. ফজলুল হকের ছেলে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ২৩ মার্চ বনশ্রীর এক বাসায় আরবি পড়ানোর জন্য গৃহশিক্ষক হিসেবে যান জাহিদুল ইসলাম। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভুক্তভোগী শিশুর বাবা-মা বাসার কাছে গ্যারেজে কাজ করছিলেন। হঠাৎ তারা জাহিদুলকে তড়িঘড়ি করে বের হয়ে যেতে দেখেন। এরপর শিশুটির কান্নার আওয়াজ শুনে ঘরে গিয়ে জানতে পারেন, শিক্ষক তাকে ধর্ষণ করেছে।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা খিলগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পুলিশ পরিদর্শক মোসা. রাশিদা জাহান রুনা তালুকদার ২০২১ সালের ২৪ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরবর্তী সময়ে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি আদালত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. সাজ্জাদ হোসেন (সবুজ) রায়ের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “ধর্ষকদের কোনো ছাড় নেই। সকল ধর্ষকের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।”
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী ইমরান হোসেন রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করি, উচ্চ আদালত থেকে খালাস পাব।”
বিচার চলাকালে আদালত মোট ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার বিশ্লেষণের পর আদালত দোষী প্রমাণিত হওয়ায় জাহিদুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।